প্রকৃত পক্ষে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হচ্ছে হিন্দু, মুশরিক,
মজুসী ও বৌদ্ধদের।
এতে তারা পান্তা খায়, গান-বাজনা করে,
র্যা লী করে, জীব-জানোয়ারের মুখোশ পরে,
মিছিল করে, শরীরের নানা অঙ্গ-প্রতঙ্গে
উল্কি আঁকে, ডুগডুগি বাজিয়ে নেচে নেচে হৈহুল্লোড় করে,
পুরুষরা ধুতি ও কোণাকাটা পাঞ্জাবী যা হিন্দুদের জাতীয় পোশাক তা
পরে, মেয়েরা লাল পেড়ে সাদা শাড়িসহ হাতে রাখি বাঁধে,
শাঁখা পরে, কপালে লাল টিপ ও চন্দন এবং
সিথিতে সিঁদুর দেয়, বেপর্দা, বেহায়া
হয়-
যা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম ও কুফরী।
নবীজী বলেন- যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে
সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-
নশর তাদের সাথেই হবে।” (আবু
দাউদ, মিশকাত শরীফ)
“হযরত আমর বিন শুয়াইব তাঁর পিতা থেকে এবং
তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলে পাক
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তি
আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে বিজাতীয়দের সাথে সাদৃশ্য
রাখে।” (মিশকাত)
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
"অতএব, তারা যেসবের উপাসনা
করে তুমি সে ব্যাপারে কোনরূপ ধোঁকায় পড়বে না।তাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা যেমন
পূজা উপাসনা করত, এরাও তেমন করছে। আর নিশ্চয় আমি তাদেরকে
আযাবের ভাগ কিছু মাত্রও কম না করেই পুরোপুরি দান করবো। [হুদঃ ১০৯]"
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
"যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজাকরে, যে
কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না, তার চেয়ে অধিক
পথভ্রষ্ট আর কে? তারা তো তাদের পুজাসম্পর্কেও বেখবর।
[আল হ্ক্বাফঃ ৫]"
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
"হে ঈমানদারগণ! এ মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য
শয়তানী কার্যকলাপ। এগুলো থেকে দূরে থাকো, আশা করা যায়
তোমরা সফলতা লাভ করবে। [সুরা মায়েদা: ৯০]"
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-
হযরত আয়েশা (রা:) থেকে বর্ণিত আছে- “প্রিয়
নবী (সা:) বলেন, বিচারের দিন ঐ সকল লোক সর্বাপেক্ষা কঠোর শাস্তিভোগ করবে,
যারা আল্লাহর সৃষ্টির অনুসরণে জীবজন্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা
নির্মাণ করে।” (সহীহ বুখারী)
অন্য এক হাদীসে হযরত আবু তালহা (রা:) থেকে বর্ণিত রাসূল
(সা:) বলেন, যে গৃহে কুকুর অথবা কোনো প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। (বুখারী, খ.২/পৃ. ৮৮০)
পহেলা বৈশাখ বা অন্য কোনো উপলক্ষ্যে ছেলেমেয়েদেরকে
বেপর্দা ও বেহায়পনার সুযোগ দিবেন না। তাদেরকে বুঝান ও নিয়ন্ত্রণ করুন। আপনি
মসজিদে নামায আদায় করছেন আর আপনার ছেলেমেয়ে পহেলা বৈশাখের নামে বেহায়াভাবে
মিছিল বা উৎসব করে বেড়াচ্ছে। আপনার ছেলেমেয়ের পাপের জন্য আপনার আমলনামায় গোনাহ
জমা হচ্ছে। শুধু তাই নয়। অন্য পাপ আর অশ্লীলতার পার্থক্য হলো, যে
ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকে ‘‘দাইউস’’ বলা
হয় এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারংবার বলেছেন যে,
»ثلاثة قد حرم الله عليهم الجنة مدمن
الخمر والعاق والديوث الذي يقر في أهله الخبث«
“তিন ব্যক্তি আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাত
হারাম করেছেন, মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য
এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয়
দেয়”। (মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯)
নিজেকে এবং নিজের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করার পাশাপাশি
মুমিনের দায়িত্ব হলো সমাজের মানুষদেরকে সাধ্যমত ন্যায়ের পথে ও অন্যায়ের বর্জনে
উদ্বুদ্ধ করতে হবে। কাজেই পহেলা বৈশাখ ও অন্য যে কোনো উপলক্ষ্যে ছেলেমেয়েদের অবাধ
মেলামেশা ও বেহায়াপনার ক্ষতি, অন্যায় ও পাপের বিষয়ে সবাইকে
সাধ্যমত সচেতন করুন। যদি আপনি তা করেন তবে কেউ আপনার কথা শুনুক অথবা না শুনুক আপনি
আল্লাহর কাছে অফুরন্ত সাওয়াব লাভ করবেন। আর যদি আপনি তা না করেন তবে এ পাপের গযব
আপনাকেও স্পর্শ করবে। কুরআন ও হাদীসে বিষয়টি বারংবার বলা হয়েছে।
ব্যবসায়িক, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক বা সামাজিক কোনো স্বার্থে অনেক মুসলিম পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে
ছেলেমেয়েদের অবাধ মেলামেশা ও বেহায়াপনার পথ খুলে দেওয়ার জন্য মিছিল, মেলা ইত্যাদির পক্ষে অবস্থান নেন। আপনার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য
এরচেয়ে ভয়ঙ্কর আর কিছুই হতে পারে না।
আসুন আমরা সবাই পাপ থেকে বাঁচার চেষ্টা করি এবং অন্যকে
খারাপ পথ থেকে ফিরাই-
আল্লাহ বলেছেন:
﴿
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا
وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ عَلَيۡهَا مَلَٰٓئِكَةٌ غِلَاظٞ شِدَادٞ لَّا
يَعۡصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمۡ وَيَفۡعَلُونَ مَا يُؤۡمَرُونَ ٦ ﴾ [التحريم: ٦]
‘‘তোমরা নিজেরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর
এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর। যার ইন্দন হবে মানুষ ও পাথর; যার
উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা
আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর
তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’। [সূরা আত-তাহরীম:
৬]
আল্লাহ আমাকে সহ সবাইকে বুঝার এবং মেনে চলার তৌফিক দান
করুক।
........Imrul Kaesh
No comments:
Post a Comment