শিশু শব্দটি উচ্চারিত হতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে
একটি সুন্দর নিষ্পাপ চেহারা। শিশুরা ফুলের মতোই পবিত্র। ফুলকে যেমন খুব যত্ন না
করলে তা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। সন্তর্পণে না ধরলে মুচড়ে যায়, ব্যাহত
হয় স্বাভাবিক সৌন্দর্য। ঠিক তেমনি শিশুর ক্ষেত্রেও তাই। এজন্য আপনাকে সচেতন হতে
হবে,বলা যায়,হতে হবে
একটু বেশিই যত্নবান। আপনার আচরণ যেন আপনার শিশুর বিকাশে অন্তরায় না হয় এটা দেখার
দায়িত্ব আপনার।
শিশুরা আসলেই অবুঝঃ
শিশু মানেই অবুঝ। সে কিছু বুঝে না বলেই সে শিশু,
আপনি পূর্ণাঙ্গ মানুষ। মানুষই একমাত্র প্রাণী যে জন্মের পর অন্যের
সাহায্য ছাড়া কিছুই করতে পারে না। আর এই সাহায্যের দায়িত্বটা পড়ে বড়দের ওপর। যে বা
যারা শিশুটির খুব কাছের একজন। এক্ষেত্রে মা-বাবা, ভাই-বোন,
দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-ফুপু
ও খালা-মামা’র কথা বিশেষভাবে স্মর্তব্য।
এ ব্যাপারে কয়েকজন শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, শিশুদের
মন বড়দের চেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল। তারা খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারে কে তাকে ভালোবাসে,
কে নয়। তাই ওরা সবার কোলে যেতে চায় না। আবার কারও কারও কোলে নিজেই
যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে।কেউ কেউ বলেন, শিশুরা ভ্রূণ অবস্থাতেও মন খারাপ করে। তাই
এই সময় মায়েদের হাসিখুশি থাকতে বলা হয়। কেননা মায়ের প্রভাব গর্ভস্থ বাচ্চার উপর
পড়ে। তাই ওদের কচি সতেজ মনে যেন খারাপ প্রভাব না পড়ে সেদিকে সবার দৃষ্টি দেয়া
উচিত।
অভ্যাসঃ
এক্ষেত্রেও তার প্রতি খারাপ আচরণ করা যাবে না। তাকে এ বিষয়টার ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝিয়ে বলতে হবে। এটা খারাপ এই বিষয়টা তার মাথায় ক্যাচ করলেই সে একা একা অভ্যাসটা ছেড়ে দেবে।
বায়নাঃ
খেলাঃ
বাচ্চারা ঘর নোংরা করা একটা খেলা মনে করে। তাকে
বোঝান এটা কোনো খেলা নয়। খেলনা দিয়ে খেলা শেখান।
বুঝিয়ে বলুন,ময়লাগুলো ময়লার ঝুড়িতে রাখার জন্য। আপনি ওর সামনে যেমন কাজ করবেন তেমনটাই ও শিখবে। একবার শিখিয়ে দেখুন ও ঠিক আপনাকে অনুসরণ করবে। বকা দিয়ে বললে দেখা যাবে, যে ময়লাটা সে একটা একটা করে ফেলছিল, সেটা ঝুড়ি ধরে ফেলে দিল। তখন আপনার ঝামেলা বাড়বে বৈ কমবে না।
বুঝিয়ে বলুন,ময়লাগুলো ময়লার ঝুড়িতে রাখার জন্য। আপনি ওর সামনে যেমন কাজ করবেন তেমনটাই ও শিখবে। একবার শিখিয়ে দেখুন ও ঠিক আপনাকে অনুসরণ করবে। বকা দিয়ে বললে দেখা যাবে, যে ময়লাটা সে একটা একটা করে ফেলছিল, সেটা ঝুড়ি ধরে ফেলে দিল। তখন আপনার ঝামেলা বাড়বে বৈ কমবে না।
নষ্টঃ
অনেকে বলেন, আমার
বাচ্চা জানালা দিয়ে এটা-ওটা ফেলে দেয়। এক্ষেত্রে শিশুকে এর জন্য দায়ী করা ঠিকনা।
কারণ আপনি হয়তো তার সামনে জানালা দিয়ে কিছু ফেলেছেন। সেটা দেখেই ও শিখেছে।
বিশেষভাবে দেখা যায়, জানালা দিয়ে চিরুণি ফেলে দেয়। কারণ আপনি জানালা
দিয়ে চিরুণি হাতে চুল ফেলেন। আর ও চিরুণি ফেলে। এক্ষেত্রে আপনাকে সচেতন হতে হবে।
কেননা বাচ্চারা অনুকরণপ্রিয়। অনুকরণ করেই সে সব শিখে।
ভয়ঃ
কেউ কেউ আছেন বাচ্চাদের ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ান। এই
যেমন—চোখ বন্ধ কর ভূত আসবে, বাঘ
আসবে, শেয়াল আসবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো বাচ্চাদের মনে
ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বাচ্চারা আড়ষ্ঠ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় বড় হয়ে গেলেও এই ভয়
মন থেকে দূর হয় না। তখন আপনি তাকে নানাভাবে বকাঝকা করেন। ভুলে যান এই ভয়টা আপনি
তার মনের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছেন। কেননা ওতো জানতই না ভয় কী? কি দেখে
ভয় করতে হয়। আবার অনেকে বলে বাবা আসছে খেয়ে নাও, ঘুমিয়ে
পড় বাবা বকা দেবে। বাবা সম্বন্ধে এমন দানবীয় ধারণা বাচ্চার মনে ভয়ের ধারণা সৃষ্টি
করে।
ভূল কিছু শিখানঃ
কোনোকিছুতেই বাচ্চাকে ভুল তথ্য দেবেন না। ভুল
জিনিস মনে গেঁথে গেলে তা আর হাজার চেষ্টায় ওঠানো যায় না। তাই খুব সচেতনভাবে
বাচ্চাদের সামনে কথাবার্তা বলুন যেন সে ভুল কিছু না শিখে যায়। পরবর্তী জীবনে তাকে
দ্বৈত্যের সম্মুখীন যাতে হতে না হয়। বলার মতো না হলে বলবেন না। ভুল কিছু মাথায়
ঢোকাবেন না। অপ্রাসঙ্গিক কথা হলে বুঝিয়ে বলুন—বড় হলে
জানবে বা এখন নয় পরে বলব।
বকাঃ
ভুলেও তাকে বকা দেবেন না বা ইঁচড়েপাকা বলবেন না।
এতে তার জানার আগ্রহ হারিয়ে যাবে বা বেড়ে যাবে, তখন
আবার আপনি না বললে কোনো খারাপ জায়গা থেকে শিখলে সে ভুল পথে চালিত হবে।
বাচ্চাদের নিজেদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না,
ওদের অতি যত্নে লালন-পালন কর“ন।
দেখবেন ও ঠিকমত বিকশিত হলে প্রস্ফুটিত গোলাপের ন্যায় সুবাস ছড়াবে।
No comments:
Post a Comment