Monday, 12 October 2015

পুরুষের ও হতে পারে প্রাণঘাতী অসুখ স্তন ক্যান্সার-জেনে নিন


চমকানোর কিছু নেই ৷ পুরুষেরও স্তন ক্যানসার হয় ৷ কিন্তু সমস্যা হলো পুরুষরা মনে করেন যে, কেবল নারীদেরই এই ক্যানসার হয় ৷ এ কারণে তারা এ বিষয়ে কিছুটা বেপরোয়া থাকেন ৷ নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করান না ৷ আর এই মনোভাবই ডেকে আনে মৃত্যু ৷
অনেকেই ভাবেন বংশে কারো ক্যানসার থাকলে, তবেই অন্যদের মধ্যে এটি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে ৷ প্যারাগুয়ের ৫৩ বছর বয়সি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসায়ী মিগুয়েল রেন ২০১২ সালে জানতে পারেন তাঁর স্তন ক্যানসার হয়েছে ৷ বংশে কারো এ অসুখটি না থাকায় এ ব্যাপারে একেবারে অসচেতন ছিলেন তিনি ৷
রেন তাঁর রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘‘বুক চুলকানো আমার একটি বদ অভ্যাসের মতো ৷ তাই একদিন চুলকাতে গিয়ে দেখলাম পোকাড় কামড়ের মতো এটা দাগ, কিন্তু কিছুদিন পর জায়গাটি শক্ত হয়ে যায় ৷”
প্রতি বছর জার্মানিতে অন্তত ৬০০ পুরুষ পরীক্ষা করান তাঁদের স্তন ক্যানসার হয়েছে কিনা ৷ অথচ প্রতি বছর জার্মানিতে ৭৪,৫০০ নারী এই পরীক্ষাটি করান ৷
জার্মান সোস্যাইটি অফ ইউরোলজি-র মুখপাত্র অধ্যাপক জাবিনে ক্লিস জানালেন, নারীদের তুলনায় পুরুষরা এই পরীক্ষাটি খুব কম করান ৷ প্রতি পাঁচ জনের একজন ৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৪ সালের বিশ্ব ক্যানসার রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে যে ক্যানসারের হার দেখা যাচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে ৭৫ বছর বয়সের আগেই প্রতি পাঁচ জন পুরুষের একজনের মধ্যে এ ধরনের ক্যানসারের প্রবণতা দেখা যাবে ৷ আর প্রতি আটজনের মধ্যে একজন এই রোগে মারা যাবে ৷
বয়সের সাথে সাথে পুরুষদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে থাকে ৷ তবে এটা ঠিক যে তরুণদের ক্ষেত্রেও এ ঝুঁকি রয়েছে ৷ জার্মানিসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশেই নারীদের স্তন ক্যানসার শনাক্তের জন্য মেমোগ্রাফির সেবা থাকলেও পুরুষদের জন্য নেই ৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রতিবেদনের সহ-সম্পাদক বার্নার্ড স্টুয়ার্ট বলেছেন, পুরুষদের জন্য এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত সরকারের ৷ সরকারকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ৷
গবেষকরা এখনো বের করতে পারেননি ঠিক কি কারণে পুরুষরা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন ৷ ক্লিস জানান, বংশে কোনো নারী আত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকলে অনেক সময় পুরুষের ক্যানসার হতে পারে ৷
এমনকি জীনগত রোগ ‘ক্লাইনেফেল্টার’ এর কারণেও অনেকের স্তন ক্যানসার হয়৷ পুরুষের শরীরে একটি অতিরিক্ত এক্স ক্রোমোজোমের কারণে এই রোগটি হয়৷ এর কারণে পুরুষের স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা ১৫ থেকে ৫০ ভাগ বেড়ে যায় ৷

লক্ষণ:

স্তন ক্যানসার হলে যে চামড়া স্তনকে ঢেকে রাখে তার পরিবর্তন দেখা যায় ৷ চামড়া লাল হয়ে যায়, কুঁচকে যায়, তাতে ভাঁজ বা খাঁজ তৈরি হয়, স্তনবৃন্তের রঙের পরিবর্তন হয়, লালচে হয়ে যায় বা ভিতরের দিকে ঢুকে যায় এবং স্তনবৃন্ত থেকে রস ক্ষরণ হয় ৷

নিজেই পরীক্ষা করুন:

কেবল নারীদের স্তন ক্যানসার হয় – এই বদ্ধমূল ধারণার কারণেই অনেক পুরুষ দেরিতে চিকিৎসা শুরু করেন৷ টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন, অনলাইন এবং পত্রিকায় যতরকম প্রচারণা হয়, সবই নারী কেন্দ্রিক ৷
সেখানে বলা হয় প্রতিটা নারীর উচিত নিজেদের স্তন পরীক্ষা করা, সেখানে লক্ষণগুলোও বলা থাকে ৷ ক্লিস এর উল্লেখ করে বললেন, পুরুষদের সচেতন করতে ঠিক এই কাজটি শুরু করা উচিত৷
তিনি জানান, যদি কোনো পুরুষ দেখে তাঁর স্তনে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে বা শক্ত হয়ে যাচ্ছে, অথবা নিপল থেকে কোনো ধরনের রস বের হচ্ছে তাহলে তাঁদের সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত ৷
তবে ক্লিস এটাও বললেন, এসব লক্ষণ দেখা দিলে যে ক্যানসার হবেই এমনটা ভাবা উচিত না, কিন্তু এড়িয়ে যাওয়াও উচিত না৷ উচিত চিকিৎসককে দেখানো ৷ নারী ও পুরুষের চিকিৎসা পদ্ধতি একইরকম বলে জানালেন তিনি ৷

Monday, 11 May 2015

পর্যপ্ত ঘুমানোর পরেও অফিসে ভীষন ঘুম আসে কেন ?

রাতে বেশ ভালো ঘুমিয়েছেন। সকালে উঠে রোজকার কাজ সেরে অফিসেও গিয়েছেন। কাজে বসেই ফের চোখ ঢুলছে। গোটা কতক বড় বড় হাইও তুলে ফেলেছেন। খানিক ক্ষণ ঠিকঠাক। ফের একই অবস্থা। একটা বালিশ পেলে তখনই একটা 'পাওয়ার ন্যাপ' নিয়ে ফেলেন আর কী! 

যদি সত্যিই এমনটা হয়, তাহলে সাবধান হোন। 
এটা শরীরে মারণ রোগ বাসা বাঁধার সংকেত হতে পারে। 
সম্প্রতি আমেরিকার পেন স্টেট কলেজ অফ মেডিসিনের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, দিনে অত্যাধিক ঘুম পাওয়ার অর্থ, শরীরে দু'টি রোগ বাসা বাঁধার আগাম পূর্বাভাস। ওবিসিটি এবং ডায়াবেটিস। সঙ্গে এটাও জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত ডিপ্রেশন থেকেও এমনটা হতে পারে। পরে এটাই ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে। যদি রাতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর পরও সকালে উঠে নাস্তা খেয়েই ফের ঘুম পায় তাহলে এটাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় এক্সেসিভ ডেটাইম স্লিপিনেস বা EDS। (চিকিৎসা) কলেজের অধ্যাপক জুলিও ফার্নান্দেজ মেনডোসা জানাচ্ছেন, যদি এমনটা হয় তা হলে দেরি না করে ওজন কমানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। সঙ্গে এটাও জানিয়েছেন, যদি ওজন তেমন বেশি না হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরি। এমনিতে আমাদের একটা চলতি ধারণা রয়েছে, যে রাতে ভালো ঘুম না হলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেও দীর্ঘ ক্ষণ ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। সময়-অসময়ে ঘুমও পায়। তবে সব সময় এমনটা হলে চিন্তার বিষয়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা আরও একটি বিষয়ে আলোকপাত করেন। তারা জানান, যাদের ওজন বেশি বা ওবিসিটির পর্যায় পৌঁছে গিয়েছেন, তাদের ঘাড়ের পেছনে অতিরিক্ত মেদ জমার ফলে উইন্ড পাইপে শোয়ার সময় চাপ পড়ে। এতে রাতে বহুবারই তাদের ঘুম ভেঙে যায়। তার সঙ্গে শরীরে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণও বাড়তে থাকে। তাই দি
নের বেলায়ও ভীষণ ঘুম পেতে পারে। তার সঙ্গে শরীরেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। তেমনই ডিপ্রেশনে ভোগা কোনো ব্যক্তিও ঠিক করে ঘুমোতে পারেন না। কারণ, একটা চিন্তা নিয়ে শোয়ার ফলে ব্রেন সজাগ থাকে। ঘুম পেতেও বেশ দেরি হয়। এই অনিদ্রা থেকই দেখা দেয় নানা সমস্যা।

Collected by - নয়াদিগন্ত

Wednesday, 6 May 2015

৫_৬_মে_২০১৩ হেফাজতের ওপর গণহত্যার ফটো আর্কাইভ

নিচের ছবিটির মত হাজারও ছবি বিভিন্ন পেপারে প্রকাশিত  http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/05/10/199483#.VUsCvfmqqko হয়েছিল।



__মে_২০১৩ তাং এ এবাদতরত ও ঘুমন্ত আলেমদের ওপর শেষরাতে পৈশাচিক অভিযান চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল প্রায় 3 হাজারের অধিক আলেম কে।
রাত তখন প্রায় আড়াইটা। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে আগত মুসল্লিদের অনেকেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে তখন ঘুমিয়ে পড়েছেন। অসংখ্য মুসল্লি তখনও জিকিরে মশগুল। এ অবস্থায় মাইকে ভেসে আসে একটি ঘোষণা-আপনারা সরে যান। এখন আমরা শাপলা চত্বর খালি করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করব।
তাতে স্বভাবতই রাজি হয়নি আল্লাহর পথে নিবেদিতপ্রাণ মুসল্লিরা। এরপর আর কথা বাড়ায়নি সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী।
অন্তত ২১ হাজার পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা ত্রিমুখী হামলা শুরু করে। ব্রাশফায়ারের মুহুর্মুহু গুলি, গ্রেনেড, টিয়ারশেল আর সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে নিরস্ত্র মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায় তারা। মুসল্লিদের দিকে গুলি আসতে থাকে বৃষ্টির মতো। 
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শাপলা চত্বরে ঘটে ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ। কেউ কেউ ঘুমের মধ্যেই চলে যান চিরঘুমের দেশে। অনেকে আবার কিছু বুঝে উঠার আগেই ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।

এভাবেই মতিঝিলের শাপলা চত্বরে নিথর হয়ে পড়ে থাকে অসংখ্য আদম সন্তানের দেহ। যে অভিযান শুরু হয়েছিল রাত আড়াইটার দিকে তা চলে সকাল অবধি। তবে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় অভিযান শুরুর প্রথম দিকেই। হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটে অভিযান শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, প্রথমেই ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। এতে হেফাজত কর্মীদের প্রতিরোধ করার মনোবল ভেঙে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, একাজে অনেকটাই সফল হয় নিরাপত্তা বাহিনী।
ইউটিউব ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও ও স্থিরচিত্তে দেখা যায়, শাপলা চত্বরের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য লাশ। 
এসব ভিডিও ও স্থিরচিত্র যে একেবারেই সত্যি তাতে বোদ্ধামহলের কারও সন্দেহ হবে না। 
তাছাড়া যেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত বা নিষিদ্ধ, যেমন ছিল গতকাল মধ্যরাতে শাপলা চত্বরে, সেখানে ইউটিউব ও সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি এখন ব্যবহার করছে বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরাসহ বিশ্বের প্রথম সারির সব গণমাধ্যম। কালেভদ্রে এসব ছবি নিয়ে বিতর্ক উঠলেও সিরিয়ার মতো অবরুদ্ধ দেশের ছবি বিশ্ববাসী জানতে পারছে এসব গণমাধ্যমের সুবাদেই। 
বাংলার চোখসহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার যে ছবি আমার দেশ-এর কাছে এসেছে তাতে দেখা যায়, শুধু সোনালী ব্যাংকের সিঁড়ি ও এর আশপাশে পড়ে আছে অসংখ্য লাশ। শাপলা চত্বরের সবচেয়ে কাছের এই ভবনটিতে গতকাল আশ্রয় নিয়েছিলেন হেফাজতকর্মীরা। জীবন বাঁচাতে তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় নির্বিচার গুলি, গ্রেনেড আর ব্রাশফায়ারে। 
মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ৬ মে রাতে তাহলে কত লোক নিহত হয়েছে?
বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে গতকাল এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন জানায়, নিহতের সংখ্যা ৩০০০ এরও বেশি হতে পারে। হেফাজতের ইসলামের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ৪০০০ এরও বেশি হবে।
একটি সূত্রের খবর, বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের একজন রিপোর্টার দাবি করেছেন, তিনি পাঁচটি ট্রাকে করে লাশ নিতে দেখেছেন। লাইভ রিপোর্টিংয়ের তার সেই তথ্য প্রচার করা হলেও পরে আর সেই খবর প্রচার করেনি চ্যানেলটি।
মার্কিন টিভি স্টেশন সিএনএন বার্তা সংস্থা এপির বরাত দিয়ে জানায়, ৬ মে রাতের নিহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। বামপন্থী রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির গতকাল বাংলা ভিশনের টক শোয় বলেছেন, সাংবাদিকদের কাছে তিনি শুনেছেন, শত শত লোককে হত্যা করা হয়েছে। তবে তার ব্যক্তিগত ধারণা, অন্তত শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীদের ধারণা, নিহতের সংখ্যা এত বেশি যে সরকার কোনো দিনই তা প্রকাশ হওয়ার সুযোগ দেবে না। বিবিসি বলেছে, পুরো মতিঝিল এলাকার পরিবেশটা একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকার মতোই লাগছিল। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শাপলা চত্বরে তিনি ৫১টি লাশ নিজে গুনে দেখেছেন।
যেভাবে চালানো হয় অভিযান :
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হাসান রাত ২টা ১০ মিনিটে মাইকে ঘোষণা দেন, আমরা এখনই অভিযান শুরু করছি। কোনো সাধারণ মানুষ এখানে থাকলে সরে যান। ডিএমপির আইন অনুযায়ী শাপলা চত্বরের আশপাশে যারা বসে আছেন, তারা অবৈধভাবে অবস্থান করছেন। আমরা কোনো গুলি করব না, শুধু শাপলা চত্বর খালি করতে এবং অবৈধ অবস্থানকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে। এই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই অভিযান শুরু করে পুলিশ র্যাব ও বিজিবির যৌথবাহিনী।
গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের আওয়াজে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মতিঝিল ও এর আশপাশের এলাকা। এ সময় হেফাজতে ইসলামের সদস্যরা আশপাশের বিভিন্ন অলিগলিতে আশ্রয় নেয়। একপর্যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ওই সব অলিগলিতেও হানা দেন।
যুদ্ধসাজে সজ্জিত যৌথ বাহিনী এরপর অভিযান চালায় গলিগুলোয়। সেখান থেকেও পিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এর পরও চলতে থাকে পুলিশের তাণ্ডব। গুলি করতে করতে হেফাজতকর্মীদের ধাওয়া করতে থাকে তারা। এ সময় অনেককে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাদের রক্তে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে তাজা রক্তের ফোয়ারা।

সেদিন তারা যে ১৩ দফা দাবীগুলো নিয়ে অবস্থান করেছিল:
১. সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসপুনঃস্থাপন এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সব আইন বাতিল করা।
২. আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস।
৩. কথিত শাহবাগি আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক-মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-এর শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী ব্লগার ও ইসলামবিদ্বেষীদের সব অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করা।
৪. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
৫. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।
৬. সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
৭. মসজিদের নগর ঢাকাকে মূর্তির নগরে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করা।
৮. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাবিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ-নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করা।
৯. রেডিও-টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাড়ি-টুপি ও ইসলামি কৃষ্টি-কালচার নিয়ে হাসিঠাট্টা এবং নাটক-সিনেমায় নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করা।
১০. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।
১১. রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম-ওলামা, মাদ্রাসার ছাত্র ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, দমন-পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করা।
১২. সারা দেশের কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ ও মসজিদের ইমাম-খতিবকে হুমকি-ধমকি, ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করা।
১৩. অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সব আলেম-ওলামা, মাদ্রাসাছাত্র ও তৌহিদি জনতাকে মুক্তিদান, দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

  
 এই পরিকল্পিত গুপ্ত গণহত্যার কিছু ছবি ইন্টারনেটের বিভিন্ন সোর্স -যেমন http://priyoboi.blogspot.com/ , বাংলার চোখ, ফটো এজেন্সি, উপস্থিত একজন ফটোজার্নালিষ্ট এর ব্যাক্তিগত সংগ্রহ, ফেব২৮ইনফোর ফটোষ্ট্রীম, কওমী অনলাইন আর ফেসবুক পেজগুলো থেকে নেয়া